সাত খুনের রায়ের পর আসামিদের প্রতিক্রিয়া

নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর আসামি নূর হোসেন এবং র‍্যাবের সাবেক তিনজন কর্মকর্তাকে স্বাভাবিক থাকতে দেখা গেছে। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, রায় ঘোষণার পরপরই কয়েকজনের কান্নার শব্দ শোনা যায়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সকাল দশটার পর এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই রায় ঘোষণা শেষ হয়ে যায়। এই মামলায় মোট আসামী ৩৫ জন। তাদের মধ্যে যে ২৩ জন আটক রয়েছেন। তাদের সবাইকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে সকাল সাড়ে ন’টার মধ্যে নিয়ে আসা হয় আদালতে।

তবে প্রধান চারজন আসামী সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‍্যাবের চাকরিচ্যুত তিনজন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ রানাকে আদালতে আনা হয় রায় ঘোষণার কিছুক্ষণ আগে।
তাদেরকেও ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আনা হয়েছিলো কিন্তু আদালতে ঢোকার সময় তাদের ডাণ্ডাবেরি খুলে দেয়া হয়। নূর হোসেনকে আনা হয় মাথায় হেলমেট পরিয়ে।

আদালতে বিচারকের আসনের বাম পাশে তৈরি লোহার বিশাল একটি খাঁচায় নূর হোসেনসহ বেশিরভাগ আসামিকে রাখা হলেও র‍্যাবের সাবেক তিনজন কর্মকর্তাকে রাখা হয়েছিলো খাঁচার বাইরে। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত ২৬ জনের মধ্যে ১৬ জনই পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‍্যাবের সদস্য ছিলেন। বাকি দশজনের মধ্যে রয়েছেন নূর হোসেন এবং তার সহযোগীরা। রায় ঘোষণার আগে আসামিদেরকে তাদের আইনজীবীদের সাথে কথা বলতে দেখা গেছে।

বিবিসি সংবাদদাতা কাদির কল্লোল বলেন, রায় ঘোষণার পর নূর হোসেনসহ র‍্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তার মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তবে লোহার খাঁচার ভেতরে থাকা কয়েকজন আসামিকে হাউমাউ করে কাঁদতে শোনা যায়।

মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা ছিলেন। সাত খুনের ঘটনার পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। মেজর তারেক সাঈদ মোহাম্মদ বর্তমান সরকারের মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর জামাতা।
রায় ঘোষণার পর আসামিদের আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে দেখা যায়নি।

তবে মেজর তারেক সাঈদের পিতা আদালতে এসেছিলেন। তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। আসামীদের আইনজীবীরা বলেছেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করবেন।
সূত্র : বিবিসি