জাঈনতাহুর শামস: করাচি লিটারেচার ফেস্টিভালে নাদিম ও শবনমকে এক ফ্রেমে দেখা গেছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর তারা এক ফ্রেমে এলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্ব ও পরবর্তী পাকিস্তান ছবির জনপ্রিয় জুটি শবনম-নাদিম। রোববার করাচি লিটারেচার ফেস্টিভালের দর্শকরা এ ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকলেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন অভিনয়শিল্পী আসিফ রাজা মীর ও মুস্তফা কুরেশিসহ প্রমুখ।
জিও টিভির খবরে বলা হয়, ওই আয়োজনে ‘সিনেমা অ্যাক্রস বর্ডারস’ শিরোনামের সেশনে অংশ নেন কিংবদন্তি এই জুটি। ওই সেশনে মূলত পাকিস্তান ও ভারতীয় সিনেশিল্পের একসঙ্গে কাজ করা নিয়ে আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে নাদিম জানান, শিল্পের কোনো সীমানা নেই। একসঙ্গে কাজ করলেও নিজেদের পরিচয়-চিহ্ন রক্ষা করেই তা করতে হবে। তার সঙ্গে একমত প্রকাশ করে শবনম বলেন, শিল্প ও খেলাধুলার মতো বিনোদনে রাজনীতিকে জড়ানো উচিত নয়।নাদিম-শবনমের মধ্যে সর্বশেষ ২০১২ সালের এপ্রিলে দেখা হয়েছিল। ওই সময় সদ্য প্রয়াত স্বামী বিখ্যাত সুরকার রবিন ঘোষও তার সফরসঙ্গী ছিলেন। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি উপমহাদেশের বিখ্যাত এই সুরকার না ফেরার দেশে চলে যান।
এদিকে, একই উৎসবে শনিবার শবনমকে কেন্দ্র করে বিশেষ সেশনের আয়োজন করা হয়, যার শিরোনাম ছিল ‘ফুল আউর শবনম’। অভিনেত্রী বুশরা আনসারি এ পর্বটি সঞ্চালনা করেন।
প্রসঙ্গত, প্রথমবারের মত উপমহাদেশের কিংবদন্তী অভিনেত্রী শবনম করাচি লিটারেচার উৎসবে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে গিয়েছেন উপমহাদেশের জীবন্ত এই কিংবদন্তী। বৃহস্পতিবার বিকালে করাচি বিমান বন্দরে পৌঁছালে বিপুল সংখ্যক শবনমভক্ত বিমানবন্দরে প্রিয় এই নায়িকাকে এক নজর দেখার জন্য ভীড় করেন।
উল্লেখ্য, চার দশকে উর্দু ভাষায় ১৮০টি চলচ্চিত্রের অভিনয় করে পাকিস্তানের রেকর্ড সংখ্যক ১২বার নিগার পুরস্কারের পাশাপাশি তিনবার পাকিস্তানের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে জন্মভূমি বাংলাদেশে ফেরেন। কাজী হায়াতের পরিচালনায় ও ঢাকা প্রোডাকশনের ব্যানারে তিনি ১৯৯৯ সালে সর্বশেষ আম্মাজান চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন শবনম।
শবনম তার দীর্ঘ বর্ণাঢ্যময় অভিনয় জীবনে রহমান, মুস্তফা, খলিল, নাদিক বেগ, ওয়াদি মুরাদ এবং মোহাম্মদ আলীর মত প্রভাবশালী চিত্রনায়কদের সঙ্গে জুটি গড়েছেন। তবে তাদের মধ্যে নাদিম-শবনম জুটি ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। শবনম তার অভিনয় জীবনে পারভেজ মালিকের পরিচালনায় সর্বাধিক চারবার সম্মানজনক নিগার পুরস্কার অর্জন করেন।
করাচি সাহিত্য উৎসবটি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতায় ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয়।