নরসিংদীতে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ

নরসিংদী প্রতিনিধিঃ  নরসিংদীর শিবপুরে মাহমুদা আক্তারকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে তিন আসামিকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ৪ অক্টোবর বুধবার দুপুর আড়াইটায়  নরসিংদীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ গোলাম রব্বানী এ দন্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলার প্রথম আসামী সুলতান মিয়া সুলতান জামাই সুলতান (৩৫)- কে ১ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ডসহ ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড এবং ০৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ডসহ ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে মামলার অন্য ২ আসামী শফিকুল ইসলাম শরীফ শফিকুল আলম শরীফ (৩২), ওসমান  মোঃ ওসমান গনি (৩৪)’র বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড ও ০৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ডসহ উভয়কে পৃথকভাবে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিগণ কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানার গোবিন্দপুর গ্রামের হোসেন আলী বেপারীর ছেলে সুলতান মিয়া, কিশোরগঞ্জ জেলার মধ্যপানান গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে শফিকুল ইসলাম শরীফ ও নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার জয়নগর গ্রামের আঃ মোতালিব এর ছেলে ওসমান গনি।

আদালতের পিপি এডভোকেট রীনা দেবনাথ জানান, মাহমুদা আক্তার (৩০) ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কিসমোতাবাদ গ্রামের বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। মোবাইল ফোনে মাধ্যমে নিহত মাহমুদার সঙ্গে শরীফের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠলেও মাহমুদা শরীফকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। এতে ক্ষুব্দ হয়ে শরীফ অপর দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে পাল্ক্রামে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এরপরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ শিবপুর উপজেলার জয়নগর চৌরাস্তা থেকে মোহাম্মদ ওসমানকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিক্তিতে কিশোরগঞ্জের লতিফাবাদ থেকে শফিকুল ইসলাম শরীফকে ও ভোলাইল থেকে সুলতানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ৩ জনই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। বিচারাধীন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ওই তিনজনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানী ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত ৩জনকে দোষী সাব্যস্ত করে (সুলতান, শরীফ ও ওসমান) মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। এছাড়া এক আসামীকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও অপর দুই আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ০৩ মাস কারাদন্ডের আদেশ দেন বিচারক। রায় ঘোষণার সময় আসামি শরিফ ছাড়া অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি রীনা দেবনাথ এবং আসামীপক্ষের মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট তৌহিদা আক্তার লাভলী।

বিজ্ঞ আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধ নেটওয়ার্ক (এন এন পি এন) ও মাদারস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এমডিএস)।