দুর্নীতির কারণেই গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে সরকার : মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন জ্বালানি খাতে দুর্নীতির কারণেই সরকার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে।

দ্বিতীয় ধাপে গৃহস্থালি ও গাড়ির জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে আটকে যাওয়ায় পর আজ বুধবার দুপুরে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ অভিযোগ করে বলেন, ‘এই সরকার পর্যায়ক্রমে জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে, গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, তেলের দাম বাড়িয়েছে। বিশ্ববাজারে যখন জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, তখনো এরা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- তারা যে দুর্নীতি করছে জ্বালানি খাতে আপনারা জানেন যে, কুইক রেন্টাল পাওয়া প্ল্যান্ট থেকে শুরু করে অন্যান্য বিষয়গুলোতে দুর্নীতির ফলে যে প্রচুর পরিমাণ ব্যয় হচ্ছে, সেটাকে কাভার করার জন্য তারা জনগণের পকেট কেটে, জনগণের কাছ থেকে বেশি দাম নিয়ে সেটা পূরণ করতে চাইছে। আমরা তখনো এর নিন্দা করেছি, কথা বলেছি, এখনো করছি।’

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরার আমির কমপ্লেক্স সংলগ্ন সড়কে স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে দুঃস্থদের মধ্যে বস্ত্র ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধনের প্রাক্কালে সাংবাদিকদের সাথে একথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
পরে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ওই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

এ সময় মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর ও বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মধ্যদিয়ে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি আবার চালু হয়েছে। এই রায়ের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে জনগণ যে ভোগান্তি পোহাচ্ছে, জনগণের আয়ের ওপরে যে চাপ পড়ছে, জনগণের প্রকৃত আয়টা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে, আজকে এটা প্রমাণিত হয়েছে।

সরকারের দাবি করা ‘অর্থনৈতিক অগ্রগতি’র সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকারের যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্লোগান, এটা সম্পূর্ণভাবে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট স্লোগান সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে। জনগণকে একেবারে জিম্মি করে তাদের পকেট কেটে বড় বড় অঙ্কের বাজেট তারা দিচ্ছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।

এবার সাত শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে যাওয়ার সরকারি দাবিকে গ্রহণযোগ্য নয় মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, চলতি অর্থবছর শেষ হতে চললেও অর্ধাংশের বেশি বাজেট বাস্তবায়ন হয়নি। কাল (আজ বৃহস্পতিবার) যে বাজেট দেয়া হবে, সেই বাজেটের পরিমাণ এত বড় যে, বরাবরই তারা বড় করছে। এইটার একটা উদ্দেশ্য তারা ফাঁপা একটা আওয়াজ তৈরি করে। গত বাজেটের ৫৫ পার্সেন্ট এখন পর্যন্ত তারা বাস্তবায়ন করতে পারে নাই। এখন ফের বড় বাজেট দেওয়ার অর্থই হচ্ছে যে তারা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। তারা মানুষকে বোকা বানিয়ে বলবে যে, আমরা অর্থনৈতিক অগ্রগতি অনেক বেশি করছি। এটাই মূল উদ্দেশ্য।

বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবিকে ‘মামা বাড়ির আবদার’ বলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দাবি জেনুইন। তারা তো বলবেনই। কারণ মামলাগুলো থাকলে উনাদের তো সবচেয়ে সুবিধা হয়, আমাদের জেলে পুরিয়ে রাখলে আমরা আদালতের বান্দায় ঘুরতে থাকি, উনারা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে সুবিধা পাবেন। এটা মামার বাড়ির আবদার নয়, এটা আমাদের জেনুইন দাবি। সব মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের বিরোধী দলকে কাজ করতে দিচ্ছেন না। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ে করা মামলা তুলে নেয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে দাবি মির্জা ফখরুলের।