এমনি এক বসন্ত দিনে

ফয়সাল মোহাম্মদ

বেশি দিন আগে নয়, ১৯৮৩ সালের এমনি এক বসন্ত দিনের কথা।


বাৎসরিক ছুটিতে এসে অনেকটা তড়িঘড়ি করে আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়ে গেল। দেখতে দেখতে আমার বাগানে ফেরার সময়ও ঘনিয়ে এল।
আমার শশুরের নিবাস ময়মনসিংহ শহরে। বাসার থেকে বের হয়ে ডান দিকে গলির শেষ প্রান্তে গেলেই রেল লাইন।
নব বধুকে রেখে আমি শ্রীমন্গলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।


বিদায়কালের আকুলতা ছাপিয়ে নতুন বউ তার প্রীয় মানুষটিকে আর এক নজর দেখবার আশায় রেল সড়কের ধারে একটি ছোট্ট গাছের নীচে দাড়িয়ে যে কাল্পনিক দৃশ্যের অবতারনা করল, সেই চিত্রটি তুলে ধরতেই আমার এই প্রয়াস:

ঠোঁটের কোণে বেনীর বাঁধন,
আঁচল কাঁধ ছেরেছে সবে
সজল আঁখি অটল এখন
রেল সড়কের পরে।
আপনার আপনজন আজ যাচ্ছে শহর ছেড়ে
মন এখন মন মানেনা ডুকরে কেঁদে মরে
চোখের পানি চোখের পরে ধরে রাখা দায়
দু এক ফোটা গড়িয়ে গেলেও দৃষ্টি ঝাপসা রয়
ভেতর ভেতর অস্থিরতা যতই প্রবল হয়
বাইরে থেকে শরীর ততই পাথর মনে হয়
চুড়ির শব্দ কানে এখন কর্নগোচর নয়
রেলের চাকা বুকের ভেতর গর্জন করে ধায়
ধুলোয় মেশা ধোঁয়ায় আকাশ আঁধার মনে হয়
এমনিভাবে ছাই, আর যাই হউক তারে দেখা যায়?
আপনার আপনজন যে যাচ্ছে শহর ছেড়ে
ঐ গাড়ীর এক কামরা থেকে দুহাত যাচ্ছে নেড়ে
আমি বলি, সেইতো হবে,
করুন হাসি হাসছে দেখো গোঁফের আড়াল থেকে।
আপনার আপনজন আজ যাচ্ছে শহর ছেড়ে।