ওয়াক্ফের পুনর্জাগরণে আন্তর্জাতিক কর্মশালা শুরু

বিডিসংবাদ ডেস্কঃ  মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ ৪ নভেম্বর ২০১৭ শনিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারঁগাও হোটেলে প্রধান অতিথি হিসেবে “রিভাইভাল অব ওয়াক্ফ ফর সোসিও ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট” শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কর্মশালা উদ্বোধন করেন। আইডিবি গ্রুপ-এর ইসলামিক রিসার্চ এন্ড ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট এর যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালায় বাংলাদেশ, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, সৌদিআরব, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র   থেকে গবেষক, পন্ডিত ও বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ফজলে কবির এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামিক রিসার্চ এন্ড ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট এর সিনিয়র ইকোনোমিস্ট ড. খলিফা মোহাম্মদ আলী। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এর চেয়ারম্যান আরাস্তু খান এর সভাপতিত্বে কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স ইউনিভার্সিটির ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. কবির হাসান। স্বাগত বক্তব্য দেন সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট-এর চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিম।

মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ প্রধান অতিথির ভাষণের শুরুতে বাঙ্গালী জাতিকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দেয়ার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। স্বাধীনতা অর্জনে মহান আত্মত্যাগের জন্য তিনি লাখো শহীদের অম্লান স্মৃতির প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষনকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামান্যচিত্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করায় আমরা গর্ববোধ করি। বক্তব্যটি মেমরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করার মহতী উদ্যোগের জন্য তিনি ইউনেসকোকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদী ভিশনকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার সম্ভাবনাময় সম্পদগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তিনি আরো বলেন, ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থায় ইসলামী ব্যাংকিং, ইসলামী মাইক্রো ফাইন্যান্স, যাকাত, ওয়াকফ, সাদাকা, কর্জে হাসানা’র মত বিষয়গুলো সমাজের আর্থিক অন্তর্ভূক্তিমূলক কার্যক্রমকে নিশ্চিত করতে টেকসই উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক উদ্দেশ্যকে সুন্দরভাবে সম্পৃক্ত করেছে।

স্বল্প সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য দূর করতে তিনি সকলের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান। ওয়াক্ফের মত বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিতদের কল্যাণ সাধনে তিনি সম্পদশালীদের এগিয়ে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আরও বলেন, ওয়াক্ফ ব্যবস্থাটি দারিদ্র্য দূর করে সামাজিক নিরাপত্তাবলয় নিশ্চিত করার সরকারী উদ্যোগ এবং এসডিজি অর্জনকে  সহজতর করবে। তিনি ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কাজের অংশ হিসেবে এ ধরণের অধিকতর কর্মসূচী গ্রহণের আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ফজলে কবির তার ভাষণে বলেন, অনেকগুলো ইসলামী ব্যাংক ক্যাশ ওয়াক্ফ ব্যবস্থাপনা করছে যেখানে কয়েক হাজার আমানতকারী তাদের অর্থ জমা রেখেছেন। আমরা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছি। তিনি ধনী ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে যাকাত ও ওয়াকফ ব্যবস্থাপনার প্রতি গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এ ধরণের কর্মসূচী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে।

সভাপতির ভাষণে আরাস্তু খান বলেন, সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা কর্মসূচীর সাথে মিল রেখেই এ কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ওয়াকফ একটি শক্তিশালী আর্থ-সামাজিক কর্মসূচী যার দারিদ্র বিমোচন, আর্থিক ন্যায়বিচার ও সুষম বন্টনের সক্ষমতা রয়েছে।