মগবাজারে বিস্ফোরণের কারণ জানতে কমিটি গঠন

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

রাজধানীর মগবাজারে শরমা হাউসের বিস্ফোরণ কিভাবে ঘটেছে তা জানতে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন।

রোববার রাত ১১টার দিকে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মগবাজারের একটি ভবনে সন্ধ্যা ৭টা ৩৪ মিনিটে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেটে। কিভাবে এই বিস্ফোরণ তা জানার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, গ্যাস বিস্ফোরণ থেকে এই বিস্ফোরণ। ভবনের নিচতলায় ফাস্ট ফুডের দোকান ছিল। দ্বিতীয় তলায় একটা শো রুম ছিল। সেখানে ফ্রিজ ছিল। তিন তলায় ছিল একটা স্টুডিও। ভবনের সামনের সড়কে কাজ চলছে। সেখানেও গ্যাস ও ইলেকট্রনিক তার রয়েছে। কিভাবে এই বিস্ফোরণ তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) কমিশনার শফিকুল ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন মগবাজারে শরমা হাউসে গ্যাস বিস্ফোরণে সাতজন মারা গেছেন।

ডিএমপি কমিশনার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এখন পর্যন্ত তারা জানতে পেরেছেন, মগবাজারের শরমা হাউসে গ্যাস বিস্ফোরণ আশপাশের সাতটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া তিনটি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারা গেছেন মোট সাতজন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মগবাজারের শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়কের তিনতলা একটি বাড়ির নিচতলা বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবুল বাশার বলেন, শরমা হাউসে (৭৯/১) সারকুলার রোডে তিন তলা পুরাতন ভবনের নিচ তলায় গ্যাস বিস্ফোরণ হয়। অনেকে হতাহত হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই বিস্ফোরণে দু’টি বাসের যাত্রীরা হতাহত হয়েছেন। অন্তত ৪৮ জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। এর মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে নেয়া হয় ১২ জনকে।

শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পাথর শংকর পাল জানান, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই ব্যক্তি মারা গেছেন। ভর্তি হওয়া আরো ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের শরীর পোড়া ছাড়াও জখমের চিহ্ন রয়েছে।

এর আগে বিস্ফোরণে তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো: সাজ্জাদুর রহমান। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত ৩৬ জনকে সেখানে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী পথচারী জান্নাত আরা বলেন, ঘটনাস্থলের অদূরে একটি ভবনে নিচে তিন দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বিকট শব্দ তিনি শুনতে পান। তিনি যে ভবনের নিচে ছিলেন, সেটির কিছু পলেস্তারা ধসে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের ওপর পড়ে। এরপর ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। সেই আগুন উড়ালসড়কের ওপরে ও নিচে বাসে ছড়িয়ে পড়ে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

বাসযাত্রী সৈয়দ ইকবাল হোসেন (৫০) বলেন, বাসটি মগবাজার ফ্লাইওভারের নিচে পৌঁছালে ফ্লাইওভারের ওপরে একটি বাসে আগুন জ্বলতে দেখেন। সেই বাস থেকে চূর্ণবিচূর্ণ কাচ ও আগুনের ফুলকি নিচে পড়তে থাকে। এরপর তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। চেতনা ফিরলে দেখেন তিনি হাসপাতালের বিছানায়।

বিডিসংবাদ/এএইচএস