৭ বছরেই হাফেজ ফিলিস্তিনি শিশু, স্বপ্ন- বড় হয়ে আল আকসার ইমাম হবে

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

মাত্র সাত বছর বয়সে পবিত্র কুরআনের হাফেজ হয়েছে এক ফিলিস্তিনি শিশু। তার স্বপ্ন বড় হয়ে মসজিদুল আকসার ইমাম হবে সে।

শিশুটির নাম মাজিদ আবু আওদাহ। তার বসবাস ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনুস এলাকায়। তার বাবার নাম আমজাদ।

খান ইউনুসের আল মুহাজিরিন আশ শরিয়াহ মাদরাসায় হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাজিদ আবু আওদাহ।

বর্তমানে ফিলিস্তিন ও আরব দেশগুলোর মধ্যে তাকে সর্বকনিষ্ঠ হাফেজ বিবেচনা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি তার দ্রুত হিফজ যাত্রার অভিজ্ঞতা ও বর্তমান পড়াশোনা ‘ইসলামী শরিয়াহ’ নিয়ে মাজিদ আবু আওদাহ কথা বলেছে প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা মুবাশিরের সাথে।

আলজাজিরাকে সে বলেছে, ‘যখন থেকে আমি মাদরাসায় যাওয়া শুরু করি, তখন আমি প্রতিদিন তিন পৃষ্ঠা করে মুখস্ত করতাম। আর ছুটির সময়ে মুখস্ত করতাম পাঁচ পৃষ্ঠা করে। পরবর্তীকালে সূরা বাকারাহ মুখস্থ শুরুর পর প্রতিদিন ১২ পৃষ্ঠা করে মুখস্ত করতাম ‘

হিফজের ‘দুর্গম’ এ যাত্রায় মাজিদ আবু আওদাহ পরিবারের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছে। সে হিফজ সমাপ্তের ব্যাপারে খুব আগ্রহী ছিল।

মাজিদের বাবা আমজাদ বলেন, ‘আমাদের ঘরে পবিত্র কুরআন হিফজ করাকে মৌলিক বিষয় বিবেচনা করা হয়। আর আমার ছেলে হাফেজ হবে- এটি স্বপ্ন কিংবা সাধ্যাতীত কোনো বিষয় ছিল না, তবে তার বয়সটি ছিল চ্যালেঞ্জিং।’

তিনি জানান, ‘তার ছেলে ধারাবাহিকভাবে পবিত্র কুরআন মুখস্থ করেছে। মাজিদ যখন কিন্ডার গার্টেনে পড়ে তখনই তিনি বুঝতে পারেন, তার মধ্যে প্রখর মুখস্থশক্তি আছে। ওই সময়ই মাজিদ ৩০ নম্বর পারা (আমপারা) মুখস্থ করতে সমর্থ হয়।’

গত বছরের আগস্টে আনুষ্ঠানিকভাবে মাজিদ আবু আওদাহ কুরআন মুখস্থ শুরু করে। সাধারণ পড়ানোশার পাশাপাশি মাত্র এক বছরের প্রচেষ্টায় এ যাত্রা সম্পন্ন করল সে।

মাজিদের স্বপ্ন- ভবিষ্যতে সে পবিত্র মসজিদুল আকসার ইমাম হবে। মাজেদের শিক্ষক তার মুখস্তশক্তির প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘পবিত্র কুরআন হিফজ করলে মহান আল্লাহ তার কাছে সব ইলমের দ্বার উন্মুক্ত করে দেন।’

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যাকায় পবিত্র কুরআনের অসংখ্য হাফেজ রয়েছেন। প্রতি বছর শিশুদের হিফজ সম্পন্নের পর বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে তা উদযাপন করা হয়। হাফেজদের সম্মাননা দিতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্থানীয় ‘দারুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ’ নামের একটি সংস্থা। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী হিফজ সম্পন্ন করেছ। শিশু-কিশোরদের মধ্যে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের শিক্ষার প্রসার করতে তা প্রতিষ্ঠিত হয়। কাতারসহ বেশ কিছু দেশের সহায়তায় গাজা এলাকায় পবিত্র কুরআন হিফজের এ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে।

সূত্র : আলজাজিরা ও অন্যান্য

বিডিসংবাদ/এএইচএস