ঢাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষে আহত ৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। গত রাতে এ সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের পাঁচ কর্মী আহত হন। ভাঙচুর করা হয় চারটি কক্ষ। ছিনতাই হয় একটি ল্যাপটপ। এ দিকে সংঘর্ষ চলাকালে বিতর্কিত ভূমিকা পালনের অভিযোগ উঠেছে হল প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

সূত্র জানায়, হলের টিভি রুমে খেলা দেখাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। পরে সেখান থেকে দুই গ্রুপ ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শোডাউন দেয় তারা। ভাঙচুর করে ৪২১, ৩০৪ ও ৩০৬ নম্বর কক্ষ এবং টিভি রুম। এই কক্ষগুলো শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুষারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ সময় ৪২১ নম্বর কক্ষ থেকে ফয়সাল নামের এক শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ ছিনিয়ে নেয় ভাঙচুরকারীরা।

সংঘর্ষে নেতৃত্ব দেয় বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রাজু আহমেদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের রাশেদ রাজন (প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে জেলে ছিল), ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সাজু ও রকিব হাসান, হলের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মনজুর আহমেদ রানা। তাদের সবাই হল ছাত্রলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমানের অনুসারী। হাফিজ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের অনুসারী ও তুষার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের অনুসারী।

সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সাইফুল, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের রাজিব, সমাজকল্যাণ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আপেল, একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আফজাল এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আফছার। তাদের মধ্যে সাইফুল গুরুতর আহত হয়েছেন। তার নাক ফেটে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাদের সবাই সাধারণ সম্পাদক তুষারের অনুসারী। আহতদের শুরুতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয় এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। তবে হল সভাপতি হাফিজ দাবি করেন সংঘর্ষে তার গ্রুপের একজনও আহত হয়েছেন।

এ দিকে সংঘর্ষকালে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: আফতাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকা পালনের অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ তিনি সংঘর্ষ চলাকালে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন না করে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: আফতাব উদ্দিন বলেন, ঘটনার সময় আমি হলের বাইরে কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তিনি আরো বলেন, এই ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করার কিছু নেই।

হল ছাত্রলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনায় একজন আহত হয়েছে এবং একটি ল্যাপটপ চুরি হয়েছে বলে জেনেছি। হল সাধারণ সম্পাদক ঢাকায় ফিরলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান তুষার বলেন, আমি অসুস্থতার কারণে চট্টগ্রামে অবস্থান করছি। ঢাকায় এসে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো। তবে এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনকে ফোন করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।