নরসিংদী প্রতিনিধিঃ নরসিংদীর মনোহরদীতে স্ত্রীকে মারধর করায় আপন শ্যালকের ধারালো ছুরির আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঞ্জুরুল হক মঞ্জু (৪৫) নামে যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
গত সোমবার রাতে মনোহরদী উপজেলার সরকারী কোয়ার্টার ‘মাধবী’র সামনে তার শ্যালক আনোয়ার হোসেন তাকে ছুরিকাঘাত করেছিল। নিহত মঞ্জু মনোহরদী উপজেলার কুড়িপাইকা গ্রামের মেজবাহ উদ্দিনের পুত্র এবং মনোহরদী উপজেলা যুবদলের সহ সভাপতি। এ ঘটনায় মনোহরদী থানা পুলিশ ঘাতক আনোয়ার হোসেন ও তার পিতা চান মিয়াকে আটক করেছে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, প্রায় ১৩ বছর পূর্বে মঞ্জুর সাথে পার্শ্ববর্তী শিবপুর উপজেলার চান মিয়ার মেয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী মোসা. শিউলি বেগমের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের কয়েক বছর পর পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। দিন-দিন তাদের সংসারে অশান্তি বাড়তে থাকে। এ সব নিয়ে স্বামী মঞ্জু প্রায়ই তার স্ত্রীকে মারধর করতো। সাংসারিক অশান্তি থেকে মুক্তি পেতে শিউলি তার দু’সন্তান নিয়ে উপজেলা কোয়ার্টারে বাসা নেয়। কিন্তু সেখানেও শান্তির বাতাস পায়নি শিউলি আক্তার। প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কথা কাটাকাটি ও মারামারি হতো।
এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার রাত সাড়ে নয়টায় স্ত্রী শিউলি আক্তারকে বেদম মারপিট করে মঞ্জু। ঘটনাটি শিউলি তার ভাই আনোয়ারকে মোবাইল ফোনে জানায়। কিছুক্ষণ পর মঞ্জু বাসা থেকে বের হলে শ্যালক আনোয়ার হোসেন, শ্বশুর চান মিয়া, শ্বাশুরী আনোয়ারা বেগম তাকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে বেদম মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেনের সাথে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে মঞ্জুর পেটে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আহত অবস্থা তাকে উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। দু’দিন চিকিৎসার পর বুধবার রাতে মঞ্জু মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বোন হোসনেআরা বেগম বাদী হয়ে মনোহরদী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. সাইদুর রহমান বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের বোন বাদী হয়ে ৩ জন এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় শ্যালক আনোয়ার হোসেন ও শ্বশুর মো. চান মিয়াকে আটক করা হয়েছে।