যেকোনো পরিস্থিতিতে সত্য ও ন্যায়ের প্রতি অবিচল থাকতে হবে : বুলবুল

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে যে বিবেক দিয়েছেন কোনো অবস্থায়তেই আমরা তার বিরুদ্ধাচারণ করবো না। ইসলামের যেটুকু ইলম আমি অর্জন করেছি, তা যেন আমি যথাযথভাবে ব্যক্তিজীবনে আমল করতে পারি। কোনো অবস্থাতেই যেন আমাদের ইলম ও আমল পরস্পর বিপরীত না হয় সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিজের ব্যক্তিগত জীবনে ইসলামের বিধি-বিধান সম্পূর্ণ রূপে মেনে চলতে হবে।
তাহলেই কেবল আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হয়ে আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের প্রকৃত সফলতা দান করবেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই সংগঠনের নেতৃত্বের বড় একটি অংশ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির থেকে আসে। এজন্য দ্বীন কায়েমের এই কাজে শিবিরের সদ্য বিদায়ী নেতৃত্বকে সচেতনভাবে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সত্য ও ন্যায়ের প্রতি অবিচল থেকে বাংলার জমিনে ইসালামী আন্দোলনকে বিজয়ী করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত সদ্য বিদায়ী শিবির নেতৃবৃন্দের সাথে প্রীতি সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মু. দেলাওয়ার হোসেন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসেন, ছাত্রশিবিরের সদ্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশসহ সদ্য বিদায়ী শিবির নেতৃবৃন্দ।

নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, পরকালীন মুক্তিই মুমিন জীবনের একমাত্র সফলতা। সে লক্ষ্যে আমাদের সকলকে ছাত্রজীবনের ইসলামের রঙে রাঙ্গানো অতীতকে ধারণ করে বৃহত্তর অঙ্গনে দ্বীন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। বর্তমান প্রযুক্তি ও চ্যালেঞ্জের এ সময়ে একমাত্র যুব সমাজই একটি আধুনিক সভ্যতা ও কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করতে পারে। তাই ঢাকা মহানগরীতে অবস্থানরত ছাত্রশিবিরের সকল প্রাক্তন সদস্য ও সাথী ভাইদেরকে এই
ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের মাধ্যমে পরকালীন মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।

ছাত্রজীবনের শপথবদ্ধ জিন্দেগীর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আগামী জীবনকে আরো সুন্দর ও গতিশীল পরিবার ও সমাজ পরিচালনার লক্ষ্যে বৃহত্তর আন্দোলনে বাইয়াতের কর্মী হিসেবে নিজেকে তৈরি করার বিকল্প নেই। বর্তমানে এদেশ থেকে ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংস করতে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চলছে। আজকে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক
অধিকার হরণ করা হয়েছে। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় এদেশের মানুষকে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শক্তির দুঃশাসন থেকে মুক্ত করতে ছাত্র আন্দোলনের সদ্য বিদায়ী নেতৃবৃন্দকে অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি দেশ ও জাতির প্রয়োজনে যেকোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার জন্য ছাত্র নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাইয়াত বা শপথ ইসলামী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। ইসলামী আন্দোলনের সফলতার জন্য বাইয়াতের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। হাদিস শরীফে বাইয়াতবিহীন মৃত্যুকে জাহিলিয়াতের মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা
হয়েছে। বাইয়াত মানুষের জীবনকে সুন্দর, জ্ঞানগত পরিপূর্ণতা, মানুষের কল্যাণকামী ও উন্নত আমলের ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা পালন করে। রাসূল সা:-এর কাছ থেকে সাহাবীগণ বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে বাইয়াত নিয়েছেন।

১) বাইয়াতে রিদওয়ান ২) আকাবার শপথ ৩) হুদায়বিয়ার শপথ ও ৪) মক্কা বিজয়। বাইয়াত গ্রহণকারীর সারা জীবন
অঙ্গীকারের ওপর অবিচল থাকা অপরিহার্য।

ছাত্রশিবিরের সদ্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিদায়ী ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের এই ব্যতিক্রমী আয়োজনে আমরা অত্যন্ত খুশি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুমিনদেরকে পরিশুদ্ধ করতে চান। বিপরীত দিকে যারা গোমরাহীতে লিপ্ত আছে তাদেরকে কলুষিত বা ধ্বংস করেন। লাখ লাখ মানুষের ভিড়ে মহান আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে কবুল করেছেন, এজন্য আমরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার পাশাপাশি এই আন্দোলনে যেন আমৃত্যু টিকে থাকতে পারি সেই দোয়া কামনা করছি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

বিডিসংবাদ/এএইচএস