শুরুতেই মোস্তাফিজের আঘাত, শেষ অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস

বিডিসংবাদ ডেস্কঃ  দিনের শুরুতেই মোস্তাফিজ আঘাত হেনেছেন আর সেইসাথে গুটিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। আগের দিনের সেই ৩৭৭ রানেই শেষ হয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। বাংলাদেশ এখন ব্যাট করছে। তামিম ইকবাল আর সৌম্য সরকার শুরু করেছেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। ম্যাচের আজ চতুর্থ দিন।

বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ১ উইকেট হাতে নিয়ে ৭২ রানে এগিয়ে ছিল সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩০৫ রানের জবাবে ৯ উইকেটে ৩৭৭ রান তুলে দিন শেষে করেছে অসিরা। তবে গতকাল সাতটি উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ খেলায় ফেরাটা নিশ্চিত করেছে।
অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের ৫৮ রানের সাথে ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের অপরাজিত ৮৮ ও মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান পিটার হ্যান্ডসকম্বের অপরাজিত ৬৯ রানের কল্যাণে ২ উইকেটে ২২৫ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। এসময় ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৮০ রানে পিছিয়ে ছিলো অসিরা।

তাই বাংলাদেশের রানকে টপকে যাবার স্বপ্ন নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করার পরিকল্পনা ছিলো অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু তৃতীয় দিনের শুরু থেকে দাপট দেখায় বৃষ্টি। নির্ধারিত সময়ে শুরু হতে পারেনি তৃতীয় দিনের খেলা।

তবে বৃষ্টির তেজ কমার পর তিন ঘন্টা পর খেলা শুরু হয় তৃতীয় দিনের। ওয়ার্নার ও হ্যান্ডসকম্বের জমে উঠা জুটি ভাঙ্গতে বোলারদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছিলো না। অবশেষে সাকিব আল হাসানের হাত ধরেই ভাঙ্গল ওয়ার্নার-হ্যান্ডসকম্ব জুটি। বল হাতে আক্রমণে আসেননি সাকিব। ফিল্ডার হিসেবেই সরাসরি থ্রোতে নন-স্ট্রাইকের উইকেট ভেঙ্গে হ্যান্ডসকম্বকে বিদায় দেন সাকিব। তাই ৮২ রানে থেমে যান হ্যান্ডসকম্ব। সেই সাথে এই জুটির স্কোর থেমে যায় ১৫২ রানে। বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় উইকেট জুটিতে এটি সর্বোচ্চ।

হ্যান্ডসকম্ব ফিরে যাবার পর ১৩তম বলে বাউন্ডারি দিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২০তম সেঞ্চুরি তুলে নেন ওয়ার্নার। তিন অংকে পা দেয়ার পর আরও ২০ রান যোগ করতে পেরেছেন তিনি। ২৩৪ বলে ৭টি চারের সহায়তায় ১২৩ রানে থেমে যান ওয়ার্নার। তাকে শিকার করেন বাংলাদেশের পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এসময় দলের স্কোর ৪ উইকেটে ২৯৮ রান।

এরপর অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে আর কোন ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে বাংলাদেশের স্কোরকে টপকে দলকে লিড এনে দিয়েছেন পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। ৯ উইকেটে ৩৭৭ রান তুলে দিন শেষ করে অসিরা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৩৮, অ্যাস্টন আগার ২২ ও হিল্টন কার্টরাইট ২২ রানে ফিরেন। স্টিভ ও’কেফি ৮ ও নাথান লিঁও শূন্য রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের মোস্তাফিজুর ও মিরাজ ৩টি করে উইকেট নেন।

স্কোর কার্ড :
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৩০৫, ১১৩.২ ওভার (মুশফিকুর ৬৮, সাব্বির ৬৬, লিঁও ৭/৯৪)।
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস (আগের দিন ২২৫/২, ৬৪ ওভার) :

ম্যাট রেনশ ক মুশফিকুর ব মুস্তাফিজুর ৪
ডেভিড ওয়ার্নাও ক ইমরুল ব মুস্তাফিজুর ১২৩
স্টিভেন স্মিথ বোল্ড ব তাইজুল ৫৮
পিটার হ্যান্ডসকম্ব রান আউট (সাকিব) ৮২
গ্লেন ম্যাকওয়েল ক মুশফিকুর ব মিরাজ ৩৮
হিল্টন কার্টরাইট ক সৌম্য ব মিরাজ ১৮
ম্যাথু ওয়েড এলবিডব্লু ব মুস্তাফিজুর ৮
অ্যাস্টন আগার বোল্ড ব সাকিব ২২
প্যাট কামিন্স এলবিডব্লু ব মিরাজ ৪
স্টিভ ও’কেফি অপরাজিত ৮
নাথান লিঁও ক ইমরুল ব মোস্তাফিজ ০
অতিরিক্ত (বা-৮, লে বা-৩, ও-১) ১২
মোট (৯ উইকেট, ১১৯.৫ ওভার) ৩৭৭

উইকেট পতন : ১/৫ (রেনশ), ২/৯৮ (স্মিথ), ৩/২৫০ (হ্যান্ডসকম্ব), ৪/২৯৮ (ওয়ার্নার), ৫/৩২১ (কার্টরাইট), ৬/৩৪২ (ওয়েড), ৭/৩৪৬ (ম্যাক্সওয়েল), ৮/৩৬৪ (কামিন্স), ৯/৩৭৬ (আগার), ১০/৩৭৭ লিঁও।

বাংলাদেশ বোলিং :
মিরাজ : ৩৮-৬-৯২-৩,
মোস্তাফিজুর : ২১.৫-২-৮৪-৪ (ও-১),
সাকিব : ৩০-২-৮২-১,
তাইজুল : ২১-১-৭৮-১,
নাসির : ৬-২-১৪-০,
মুমিনুল : ২-০-৬-০,
সাব্বির : ১-০-৯-০।