ভূয়া তথ্যে বিভ্রান্ত না হবার অনুরোধ জেএমআই গ্রুপের গণসংযোগ কর্মকর্তার

ভূয়া তথ্যে বিভ্রান্ত না হবার অনুরোধ জেএমআই গ্রুপের গণসংযোগ কর্মকর্তার

রিয়াজ উদ্দিন মানিকের ফেসবুকের পাতা থেকে,

গত দুইদিন ধরেই যারা আমাদের শুভাকাঙ্খী আছেন, পরিচিত আছেন তার বিভিন্নভাবে জানার চেষ্টা করছেন যে, “জেএমআই কতৃক এন-৯৫ মাস্ক প্রদান এবং তা নিম্নমানের” এবিষয়ে আমাদের বক্তব্য কি। আমি প্রায় তিন বছর ধরে জেএমআই গ্রুপে আছি। আর জেএমআই কে জানি আরও কয়েক বছর আগে থেকেই। কিছু কথা বলার প্রয়োজন মনে করছি।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবায়/ মেডিকেল ইকুইপমেন্ট সেক্টরে দীর্ঘ ২১ বছরের পথ চলা জেএমআই গ্রুপের। যখন দেশের অর্থ বিভিন্ন দেশে পাচার হবার তথ্য পেয়ে আমর হতাশ হই ঠিক তখনই এটা জেনে আমার মত আপনারও ভাল লাগবে যে, জাপান, সাউথ কোরিয়া, তার্কি, চায়নার মত দেশ থেকে হাজার কোটি টাকার ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে এই জেএমআই গ্রুপ। গত ১৩ বছর ধরে ১ থেকে ১২ বছর বয়সের বাচ্চাদের যে টিকা দেওয়া হয় তার প্রতিটা সিরিঞ্জ এই জেএমআই এর তৈরি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গতবছর যে ভ্যাকসিন হিরোর পুরস্কার পেয়েছেন সেই যাত্রার সহযাত্রী এই জেএমআই। চায়নাতে যখন প্রথম এই মহামারী আসে তখন আপনাদের মনে পড়ে যে বাংলাদেশ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সরাঞ্জম পাঠিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? মনে থাকারই কথা। সেখানে জেএমআই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বাস্থ্য সরাঞ্জম জমা দিয়েছিল প্রথম ধাপেই। দেশের যখন ক্রান্তিকাল ঠিক সেই সময় কোনও প্রকার অর্থ ছাড়া, শুধুমাত্র মুখের কথায় সিএমএসডিকে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সরাঞ্জম দিয়ে আসছে জেএমআই। ঠিক তেমনিভাবেই গত মাসের ২৯ তারিখ মুগদা জেনারেল হাসপাতাল থেকে একটা অভিযোগ আসে যে, সিএমএসডি থেকে যে মাস্ক তাদের সরবরাহ করা হয়েছে তা এন-৯৫ না! আসলে মোটা দাগে বলতে গেলে আমরা সিএমএসডিকে এন-৯৫ সরবরাহ করিনি বা সিএমএসডি থেকে আমাদের এন-৯৫ এর কোন অর্ডার ও করা হয়নি।তাহলে আপনাদের মনে প্রশ্ন আসবেই যে, প্যাকেটের গায়ে কেন এন-৯৫ কেন লেখা? হ্যা এমন প্রশ্ন স্বাভাবিক। আমাদের ভুল টা এখানেই যেটা আমরা অবলীলায় স্বীকার করে নিয়েছি প্রথমেই।আমরা সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিকে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানিয়েছি, কারন ব্যখ্যা করেছি। এন-৯৫ মাস্ক একটি বিশেষ মাস্ক যা বাংলাদেশে কেউই তৈরি করেনা। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি এন-৯৫ মাস্ক তৈরির যা এখনো ডেভেলপমেন্ট পর্যায়ে আছে। বিভিন্ন রেগুলেটরি ইস্যুর জন্য প্যাকেট করা হয়েছিল যা আমাদের ফ্যক্টরিতেই ছিল। করোনার সময়ে অনেক কর্মকর্তা তাদের লাইফ রিস্কের কারনে ফ্যাক্টরিতে না আসায় শ্রমিকদের একটা অংশ না বুঝেই আরএনডির এই প্যাকেটে নরমাল মাস্ক দিয়ে দেয়! আমরা যদি কমার্সিয়ালি এই প্যাকেট দিব তাহলে নিশ্চয়ই প্যাকেটর গায়ে উৎপাদনের তারিখ, ব্যাচ নং, এমআরপি এগুলা থাকবে! কিন্তু আমার পরিচিত সাংবাদিক ভাইয়েরা যারা আছেন আপনারা খোজ নিয়ে দেখবেন যে প্যাকেটের গায়ে এসব কিছুই লেখা ছিলনা। সুতারাং এটা বলতে পারি যে, এটা কমার্সিয়ালি যায়নি। এই ধরনের ভুলের দায় আমরা কোনভাবেই এড়িয়ে যায়নি বরং প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছি শুরু থেকেই। ৩০ তারিখ মুগদা জেনারেল থেকে সহ আমাদের সরবরাহের ৫০০০ পিছ মাস্ক ফেরত আনা হয় এবং আমাদের অর্ডার লিখিতভাবে আমরা করবনা বলে জানিয়ে দেই।এরপর এই মাস্ক আর কখনো, কোথাও, কোনভাবেই ব্যবহৃত হয়নি। এটা আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি।পরবর্তীতে আমরা আমাদের ভুল স্বীকার করে যাদের কারনে এই ভুল হয়েছে তাদের চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেই এবং সেটাও জানানো হয়। কিন্তু আজ প্রায় ১৫ দিন পর হটাৎ করে এই ইস্যু নিয়ে কে, কারা, কিসের স্বার্থে ফেসবুকে, ভুয়া অনলাইনে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছাড়িয়ে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের খেলায় নেমেছে তা আমার বোধগম্য না। জেএমআই কে যারা চিনেন তারা এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য পেয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেছেন তাই সবার জন্য বিষয়টি পরিস্কার করলাম।

আরেকটা বিষয়েও কথা বলতে চাই, আজ ইত্তেফাক পত্রিকায় জেএমআই কে জামাতি প্রতিষ্ঠান হিসাবে এবং জেএমআই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জামাত-শিবির বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে! আপনাদের কাছে প্রশ্ন করতে চাই, গণজাগরণ মঞ্চের সেই উত্তাল দিনগুলোর পরে যখন জামাতি প্রতিষ্ঠান গুলোর তালিকা হয়েছিল সেখানে কি বা কোনদিন, কোনকালেই কি শুনেছেন যে জেএমআই জামাতি প্রতিষ্ঠান? বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন যে, জনাব আবদুর রাজ্জাক কে কেউ কোনদিন কোন রাজনৈতিক কার্যক্রমের সাথে দেখেছেন? চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলেই সে শিবির করে? জীবনের বেশির ভাগ সময় উনি দেশের বাইরে কাটিয়েছেন, বিদেশের বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে দেশে ব্যবসা করে ৮০০০ শ্রমিকের পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিয়েছেন।

বৃহৎ শিল্প উৎপাদন খাতে দুইবার সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন, জেএমআই এর পণ্য ইউরোপ সহ ৩২ টা দেশে উনিই এক্সপোর্ট করেছেন আর আজ তাকেই আমরা পরাজিত করা জন্য নোংরামিতে মেতেছি!জেএমআই জামাতি প্রতিষ্ঠান হলে আমি ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে কিভাবে এত বড় একটা গ্রুপ অব কোম্পানির গণসংযোগ কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করছি? আমার মত অন্তত ২০ টা ছেলে এইখানে কাজ করে যারা সরাসরি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।শুধুমাত্র টেন্ডার না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে, কোয়ালিটি তে কম্প্রোমাইজ না করার কারনে, কাউকে অবৈধ টাকা না দেবার কারনে যে আজ আপনারা যারা একজন সম্মানিত মানুষের সম্মান নিয়ে খেলছেন তা আল্লাহ নিশ্চয়ই দেখছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সম্মানিতদের সম্মান রক্ষা করবেন।

আ,ফ,ম রিয়াজ উদ্দিন মানিক 

গণসংযোগ কর্মকর্তা
জেএমআই গ্রুপ

বিডিসংবাদ/এএইচএস