চট্টগ্রামে ছাত্রলীগকর্মী খুন, নেপথ্যে ইয়াবা ব্যবসা

চট্টগ্রামে ইয়াবা ব্যবসার বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে ইয়াসিন হোসেন (২৬) নামে এক ছাত্রলীগকর্মী নিহত হয়েছেন।

শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর রিয়াজুদ্দিন বাজারের গোলামরসূল মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মো. হারুন (২৭) ও এরফান (২১) নামে আরও দুই ছাত্রলীগকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।

আহত এ দুজনকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইয়াসিন মারা গেছে এ খবর জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে এরফান পালিয়ে যান।

অন্যদিকে হারুনকে পুলিশ জেনারেল হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেছে। নিহত ছাত্রলীগকর্মী ইয়াসিন সিটি কলেজের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি সাতকানিয়ার ছদাহা ইউনিয়নে।

ইয়াসিনকে ছাত্রলীগের অপর একটি পক্ষ ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে রিয়াজুদ্দিন বাজার এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকালে ইয়াবা ব্যবসার টাকার বিরোধকে কেন্দ্র করে ইয়াসিন, হারুন ও এরফানের মধ্যে কথাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

এ সময় ইয়াসিন ও তার অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে হারুন ও এরফানকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে হারুন ও এরফান কোমর থেকে ছোরা বের করে ইয়াসিনকে উপর্যুপরি আঘাত করে।

আশংকাজনক অবস্থায় ইয়াসিনকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

একাধিক সূত্র জানায়, ইয়াসিন, এরফান, হারুন, মোল্লা ইসমাইল, সাতকানিয়ার মনজুর আলম ওরফে কানা মঞ্জু, সাইফুদ্দিন, চাক্তাইয়ের রোহিঙ্গা আবুল কালাম মাঝি, রিয়াজউদ্দিন বাজারের মোহাম্মদীয়া প্লাজার শরীফ ও সাতকানিয়ার জাহেদসহ কয়েকজন রিয়াজুদ্দিন বাজারের ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রক।

এদের অনেকে ইয়াবা ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। ইয়াবা ব্যবসার টাকার ভাগ-বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় মারামারি লেগেই থাকতো।

অবৈধ ইয়াবা ব্যবসার কোটি কোটি টাকা ভাগ বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে রিয়াজুদ্দিন বাজার ও নিউমার্কেট এলাকায় ছাত্রলীগ নামধারী নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েকটি গ্রুপ ও উপ- গ্রুপের সৃষ্টি হয়।

পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আবদুর রউফ যুগান্তরকে বলেন, রিয়াজুদ্দিন বাজারে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে হারুন ও এরফানের ছুরিকাঘাতে ইয়াসিন গুরুতর আহত হন।

গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে আবদুর রউফ জানান।