সিরিজে সমতা

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলতি সিরিজের শেষ ওয়ানডে হেরে ১-১ সমতায় শেষ হল তিন ম্যাচ সিরিজ। জয়ের জন্য ২৮১ রান প্রয়োজন হলেও ব্যাটিং ব্যার্থতায় হাতছাড়া হয়ে গেল সিরিজ।

২৮০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১১ রানেই গুরুত্বপূর্ণ ৩ ব্যাটসম্যানকে হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন অনেকদিন পর দলে ফেরা নুয়ান কুলাসেকারা। ৪ রানে ক্যাচ দিয়ে তামিম ইকবালের বিদায়ের পর বাজে শট খেলতে গিয়ে ০ রানে ফিরে যান সাব্বির রহমান। ১ রানের ব্যবধানে এলবিডাব্লিউয়ের শিকার হন ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ খ্যাত মুশফিকুর রহিম। এই জোড়া ধাক্কা সামলানোর আগেই এলবিডাব্লিউ মুশফিকুর রহিম (০)! রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি কোনো। এরপরই দলের হাল ধরেন ওপেনার সৌম্য সরকার এবং সাকিব আল হাসান।

৩ উইকেট পতনের পরও সৌম্য সাবলীল ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন। তার ব্যাটের স্ট্রোক জয়ের আশা দেখালেও চতুর্থ উইকেটে ৭৭ রানের জুটি করে দিলরুয়ান পেরেরার বলে ৪৪ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৩৮ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন সৌম্য। স্বভাবসুলভ ব্যাটিংয়ে ৫৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন সাকিব আল হাসান। তার কিছু পরেই দলীয় ১১১ রানে বোল্ড হয়ে যান মোসাদ্দেক (৯)। সাকিবও ৫৪ রান করে উইকেটে থাকতে পারেননি। গুনাটিকালার বলে পেরেরার হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। আউট হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ৫৪।

সাকিবের আউটের পর ব্যাক্তিগত ৭ রানে লাকমালের বলে চান্দিমালের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মাশরাফি ব্যাটিংয়ে নেনে দীর গতিতে খেলা শুরু করলেও টিকতে পারেননি বেশিক্ষন। প্রসন্নর বলে কট এ্যন্ড বোল্ড হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ১৬ রানে টাইগার ক্যাপ্টেন। তাসকিনকে নিয়ে মেহেদী মিরাজ উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করেন অনেকক্ষন। কিন্তু বিপুল রানের বোঝা একা তার পক্ষে বহন করা সম্ভব ছিল না। তাসকিনকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। তুলে নেন নিজের অর্ধশতক। তিনি ফিরে যাওয়ার আগে দলকে নিয়ে গেছেন সম্মানজনক অবস্থানে। ছয় মারতে গিয়ে কুলাসেকরার বলে থারাঙ্গার বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি।

মিরাজ ফিরে যাওয়ার পর উইকেটে আসের কাটারবয় মুস্তাফিজ। মিরাজ ফিরলে কুলাসেকরার পরের বলেই গুনারত্নের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তাসকিন।

শনিবার সিরিজের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাবে (এসএসসি) স্বাগতিকদের বিপক্ষে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় টাইগাররা। ব্যাট করতে নেমে ৭ নম্বর ব্যাটসম্যান থিসারা পেরেরার ব্যাটিং তাণ্ডবে ৯ উইকেটে ২৮০ রান তোলে স্বাগতিকরা। ম্যাচের শুরুতে আক্রমণাত্বকভাবে ব্যাট করে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। গুনাথিলাকা-থারঙ্গা ওপেনিং জুটিতে লঙ্কানরা স্কোরবোর্ডে ৭৬ রান সংগ্রহ করে। অবশেষে এই জুটি ভাঙতে সক্ষম হন বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যক্তিগত ৩৪ রানে গুনাথিলাকাকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন তিনি। পরে ১৩.৪ ওভারে দলীয় ৮৭ রানে উপল থারাঙ্গাকে বোল্ড আউট করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। আউট হওয়ার আগে থারাঙ্গা ৩৫ বলে ৫টি চার ও ১টি ছয়ের মারে ৩৫ রান করেন।

দিনেশ চান্দিমালও ৩৫ বলে ২১ রান করে মুশফিকের ক্ষিপ্রতায় রান আউট হয়ে যান। এরপর বদলি ফিল্ডার শুভাগতর থ্রোতে সেই মুশফিকের নৈপুণ্যে রান আউটের স্বাদ পান শ্রীবর্ধনা (১২)। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ৬৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কুশল মেন্ডিস। শেষ পর্যন্ত ৫৪ রানেই মুস্তাফিজের অফ কাটারে মুশফিকের হাতে ধরা পড়ে থামতে হয় তাকে। নিয়মিত উইকেট হারানোর মাঝে দলের হাল ধরেন ৭ নম্বরে ব্যাট করতে নামা থিসারা পেরেরা। তার ৪০ বলে ৪ বাউন্ডারি এবং ১ ওভার বাউন্ডারিতে ৫২ রানের ঝোড়ো ইনিংস থামে মাশরাফির বলে তাসকিনের তালুবন্দি হয়ে। অষ্টম উইকেটে জুটি হয় ৪৫ রানের।

বাংলাদেশের হয়ে মাশরাফি ৩টি ও মুস্তাফিজ ২টি উইকেট পেয়েছেন। আর ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মিরাজ ও তাসকিন।