শুরু হতে যাচ্ছে ‘স্টাডি অন আইসিটি জব মার্কেট ইন বাংলাদেশ’ কার্যক্রম

বিডিসংবাদ ডেস্কঃ বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিখাতের আগামী দিনের দক্ষ নেতৃত্ব ও চাকরী সন্ধানীদের যথাযথ তথ্যপ্রযুক্তি দক্ষত্য়া উপযুক্ত কওে গড়ে তোলার  লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি চাকরি অনুসন্ধানের ওয়েবপোর্টাল জবসবিডি ডটকমের সহযোগিতায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শুরু করতে যাচ্ছে ‘স্টাডি অন আইসিটি জব মার্কেট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কার্যক্রম।

আজ রোববার (২০ আগস্ট) বিকেল ৩.০০টায় রাজধানীর কাওরান বাজারে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস)-এর সম্মেলনকক্ষে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের  ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাননীয় সচিব জনাব শ্যাম সুন্দর শিকদার

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সভাপতি জনাব মোস্তফা জব্বার এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)-এর সভাপতি জনাব আলী আশফাক।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব মোঃ সবুর খান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যানাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. সৈয়দ আকতার হোসেন, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ড. তৌহিদ ভূইয়া ও ক্যারিয়ার ডেভেলাপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক আবু তাহের খান।

প্রধান অতিথর বক্তব্যে শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, “ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এই জরিপ একটি সময়পোযোগী উদ্যোগ। এই জরিপের ফলাফল থেকে আমরা জানতে পারবো বাংলাদেশের আইসিটি খাতে কী পরিমাণ কর্মসংস্থানের প্রয়োজন এবং কোন ধরনের দক্ষতাসম্পন্ন লোকবল প্রয়োজন। জরিপটি শুধু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে না হয়ে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে হওয়া উচিত। কারণ বিশ্বায়নের এই যুগে সারা বিশ্ব পৃথিবী চাকরির জন্য উন্মুক্ত।”

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের জরিপের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও জবসবিডি ডটকমকে সাধুবাদ জানিয়ে শ্যাম সুন্দর শিকদার আরও বলেন, প্রতি বছর আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে হাজার হাজার গ্রাজুয়েট বের হয়, কিন্তু চাকরির বাজারে দক্ষ লোক পাওয়া যায় না। কেন এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তার কারণও এই জরিপ থেকে উঠে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, “জরিপের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এই জরিপের ক্ষেত্রে পারপসিভ স্যামপ্লিংয়ের (purposive sampling) পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে ফলাফল সবচেয়ে যৌক্তিক হবে বলে মনে করেন শ্যাম সুন্দর শিকদার। এই জরিপের সঙ্গে এডিবির সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহের কথা জেনে শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, এডিবির সম্পৃক্ত হলে এই জরিপ নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক মানে উত্তীর্ণ হবে।”

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ সবুর খান বলেন, “ইদানিং প্রায়ই সবাই একটা কথা বলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স কারিকুলাম পরিবর্তন করা দরকার, কিন্তু কেউ সুনির্দিষ্টভাবে বলেন না, কোন ধরনের পরিবর্তন দরকার। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স কারিকুলাম পরিবর্তন করতে গিয়েও পারে না, কারণ তাদের হাতে কোনো তথ্য নেই। এই প্রয়োজনীয়তা থেকেই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি জরিপ পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে।”

মোঃ সবুর খান বলেন, “এই জরিপ সফল হলে তারা ক্রমান্বয়ে অন্যান্য বিষয়েও এ ধরনের জরিপের আয়োজন করবেন। এসময় তিনি আরো বলেন, একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগেই যেন জানতে পারে তার কোন বিষয়ে পড়া উচিত।  কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেটা তারা জানতে পারে না। কারণ তাদের সামনে এমন কোনো তথ্য নেই যা দেখে তারা বুঝবে যে বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে কোন বিষয়ের চাহিদা বেশি।”

মোঃ সবুর খান আরও বলেন, “একজন শিক্ষার্থী যখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার পরও বেকার থাকে তখন তার দায়ভার গিয়ে পড়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর। বিশ্ববিদ্যালয় তাকে প্রকৃতভাবে বা যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারেনি বলেই তাকে বেকার থাকতে হচ্ছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।”

বেসিসের সভাপতি মোস্তফা জব্বার বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদেরকে অনেককিছু পড়ানো হয়, যার বেশিরভাগই কর্মক্ষেত্রে কাজে আসে না। এখন সময় এসেছে কর্মক্ষেত্রের উপযোগী করে কোর্সকারিকুলাম প্রণয়ন করা। এই জরিপের মাধ্যমে আমরা জানতে পারব প্রকৃতপক্ষে কোন সেক্টরে কেমন দক্ষ লোকবল প্রয়োজন। কোর্স কারিকুলামে কী কী পরিবর্তন আনা প্রয়োজন সেটাও জানা যাবে। এসময় তিনি ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে একাডেমির সমন্বয়ের প্রতি গুরুত্ব দিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি আলী আশফাক বলেন, “বাংলাদেশের আইটি সেক্টরে বিগত কয়েক বছর ধরে বিপ্লব চলছে। সত্যিকার অর্থেই দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে আইসিটি সেক্টরে প্রচুর কর্মসংস্থানের তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আমরা জানিনা, আইটি সেক্টরের কোন অংশে কী পরিমাণ কর্মসংস্থানের প্রয়োজন। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জানে না, তারা যে গ্রাজুয়েট তৈরি করছে তা আদৌ চাকরি বাজারের উপযাগী কি না। এই দুই সেক্টরের তথ্যগত সমন্বয়হীনতা কাটাতে এই জরিপ সাহায্য করবে।”

বিডিসংবাদ/এএইচএস