ভীতি প্রদর্শন করে রাবি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ছাত্রলীগের চাঁদা আদায়

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদা আদায় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুজন নেতা। রোববার দুপুরে ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে ছয় হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা।

ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মামুন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত জাকারিয়া জামান জ্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে পড়াশুনা শেষ করেছেন এবং অনিক মাহমুদ বনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে জ্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন এবং বনি বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে দশটার দিকে জাকারিয়া জামান জ্যাকসহ ছাত্রলীগের কিছু নেতা কর্মী  টুকিটাকি চত্ত্বর থেকে রিক্সায় করে নিয়ে যান আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। পরে তাকে শের-ই-বাংলা হলের ২০১ নম্বর কক্ষে আটকে রেখে মারধর ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে ছয় হাজার টাকা আদায় করা হয়।

ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘এর আগেও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে জ্যাক এবং বনি আমার কাছ থেকে একবার পাঁচ হাজার এবং আরেকবার এক হাজার সাত শত টাকা নিয়েছে। তখন তারা আমাকে বলেছিল যে, বিষয়টি কাউকে জানালে জামায়াত-শিবিরের কর্মী বলে পুলিশে ধরিয়ে দেবো। তার ভয়ে তখন টাকা দিয়ে রাজনৈতিক কিছু বড় ভাই মিলে বিষয়টি মিমাংসাও করে দিয়েছিল বনি’।

তিনি আরও বলেন, ‘মিমাংসা হওয়ায় ভেবেছিলাম আর টাকা দিতে হবে না। কিন্তু রোববার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্ত্বরে নাস্তা করার সময় জ্যাক আমাকে রিক্সায় করে নিয়ে আসেন শের-ই-বাংলা হলে আমাকে আটকে রেখে আবারো পুলিশে ধরিয়ে দেবার ভয় দেখিয়ে আমার বাবার কাছে ফোন দিয়ে দশ হাজার টাকা দাবি করে। পরে বাবা কোনভাবে ছয় হাজার টাকা আমার নম্বরে বিকাশ করে দেয়। এরপর বনি ও জ্যাক মিলে আমাকে প্রথমে সিনেট ভবন চত্ত্বর, তারপর স্টেশন বাজারে নিয়ে টাকা ক্যাশ আউট করিয়ে নিয়ে আমাকে ছেড়ে দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর দপ্তরে গিয়ে মৌখিকভাবে প্রক্টরের কাছে বিষয়টি খুলে বলি’।

এ বিষয়ে জাকারিয়া জামান জ্যাকের বলেন, ‘বিষয়টি সম্পুর্ণ মিথ্যা। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য  অন্য কোন পক্ষ এমনটা সাজিয়েছে’। রিক্সায় করে নিয়ে আসার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ওই ছেলেকে আমি চিনিই না। তাকে রিক্সায় করে নিয়ে আসার তো প্রশ্নই আসে না।’

এ বিষয়ে অনিক মাহমুদ বনি বলেন, ‘এ ঘটনা তো আমি জানিই না। পরিকল্পিতভাবে আমাকে বিপদে ফেলার জন্য অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে’।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পক্ষ থেকে আমরা জেনেছি। ঘটনার সত্যতা নিয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। সত্যতা পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’