শোষণহীন গণতান্ত্রিক সমাজ কায়েম করতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আরো বেশী চর্চার আহ্বান : ড. অনুপম সেন

বশির আল মামুন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের আন্দোলনের শ্রেষ্ঠ নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ভূমিকা নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে, গবেষকবৃন্দ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর প্রদত্ত ভাষণ রাজনীতি, রাজনৈতিক কৌশল, পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য উজ্জীবিত করার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্যোগে ২৯ আগস্ট, সন্ধ্যায় আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মিলনায়তনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়। আলোচনা সভার শুরুতে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও অন্যান্যদের সাথে নিয়ে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুস্পার্ঘ অর্পণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সাদেক মোহাম্মদ চৌধুরী’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল আলম।

অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এ এ এম জিয়া হুসাইন, প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এম আলী আশরাফ, পিইঞ্জ., কেন্দ্রের ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এম. এ. রশীদ, ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী উদয় শেখর দত্ত ও সম্মানী সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, আইইবি, ঢাকা কেন্দ্রের সম্মানী সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আমিনুর রশীদ চৌধুরী মাসুদ, আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রকৌশলী খুরশীদ উদ্দিন বাদল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রকৌশলী বিজয় কুমার চৌধুরী কৃষাণ, ভেটেরেনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল আলম।

প্রধান অতিথি আরো বলেন, বাঙালি জাতির স্বাধীকার আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু ৫৫ বছরের জীবনের প্রায় ১৪ বছর জেলের অভ্যন্তরে কাটিয়েছেন। জেলের অন্ধকার প্রকোস্টে বসে পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী তাঁর সাথে ও বাঙালি কয়েদিদের সাথে যে অমানবিক আচরণ করেছে তা সম্প্রতি প্রকাশিত ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ করা ও তা থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে যত বেশী গবেষণা হবে বাঙালি জাতি ততই সমৃদ্ধ হবে এবং দেশে গণতান্ত্রিক সমাজ কায়েমের পথ সহজতর হবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে যখন ধীরে ধীরে পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যা”িছলেন ঠিক তখনই ঘাতকরা জাতির জনককে নির্মমভাবে হত্যা করে। প্রধান অতিথি বলেন, স্বাধীনতার দশ মাসের মাথায় দেশ ও রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সংবিধান রচনা করে বিশ্বের ইতিহাসে নজীর ¯’াপন করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই সংবিধানে দেশের ক্ষমতার মালিক জনগণ এ কথা সন্নিবেশ ঘটিয়েছিলেন। প্রধান অতিথি বলেন, যে মহানায়কের জন্ম না হলে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের এ স্বাধীন সার্বভৌম দেশের অভ্যুদয় ঘটতো না। বঙ্গবন্ধু সকল বিতর্কের উর্ধ্বে তিনি জাতির পিতা ও স্বাধীন বাংলাদেশের ¯’পতি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি যেভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল এবং হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল তারাই ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করেছিল। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর আদর্শকে এদেশের হৃদয় থেকে মুছে ফেলতে পারেনি। তিনি বলেন, এখনো প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলো মাথাছাড়া দিয়ে উঠতে অপচেষ্টা চালা”েছ। তাদের সম্পর্কে সজাগ থেকে বর্তমান প্রধান মন্ত্রী ও সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচিতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে খতমে কোরআন এবং মিলাদ মাহফিলেরও আয়োজন করা হয়।