সরকারের উচিৎ প্রবাসীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে কাজ করা: নাসির

দূতাবাসের উচিৎ হবে দেশটিকে আরো প্রত্যক্ষ সমীক্ষা করে প্রবাসীদের নিয়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে কাজ করা। ট্রেইন্ডহ্যান্ডের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের আরো বেশি করে সুযোগ করে দিতে হবে সেখানে ঢোকার। সরকার টু সরকার কাজ করলে যতটুকু এগুতো পারবো আমরা ব্যক্তি বা সংগঠনের উদ্যোগে কিন্তু অতটা সহজ নয়।

নাসির আহমেদ মিলু মজুমদার

বিডিসংবাদ নিজস্ব প্রতিবেদকঃ 

নাসির আহমেদ একজন ক্রিকেটার থেকে প্রবাসী নেতা। পরিচিতজনদের কাছে অবশ্য তিনি পরোপকারী মিলু মজুমদার নামেই সুপরিচিত। গত চার বছর ধরে ব্রাজিলে প্রবাস জীবন কাটালেও তিনি স্বজন আর দেশের মানুষকে ভুলে থাকতে পারেননি। দেশে থাকতে ছিলেন প্রাণচঞ্চল, পরোপকারী একই সঙ্গে ক্রিকেটের পোকা। যদিও পারিবারিক কারণে তাকে চলে যেতে হয় দক্ষিণ আফ্রিকাতে। সেখানে তিনি বড় ভাইয়ের সঙ্গে ব্যবসা করতে থাকেন। কিন্তু মনমগজে যার ক্রিকেট তাকে ফেরায় সাধ্য কার? দেশে থাকতে ফেনী জেলা ক্রিকেট একাদশের খন্ডকালীন ক্যাপ্টেন। দক্ষিণ আফ্রিকাতে থাকতে খেলেছেন প্রথম শ্রেণি ক্রিকেট। তিনি সেখানে নর্থ-সাউথ প্রভিন্সের ভাইস ক্যাপ্টেইন ছিলেন। অর্থাৎ নেতৃত্ব গুণ তার সহজাত। গত ৪ মার্চ ব্যক্তিত্ব আর ব্যবহারের কারণে সম্প্রতি ব্রাজিল প্রবাসীরা তাকে বৃহত্তর নোয়াখালী কমিটির সভাপতি হিসেবে বরমাল্য দিয়েছেন। কি ভাবছেন নতুন নির্বাচিত এই প্রবাসী নেতা, সে ভাবনা নিয়ে বিডিসংবাদের সঙ্গে তার ভাবনা পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-

সরকারের উচিৎ প্রবাসীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে কাজ করা: নাসিরবিডিসংবাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় নাসির আহমেদ জানান, তিনি কেবল প্রবাসী ফেনীর নেতা হিসেবে নন, একজন প্রবাসী বাংলাদেশি হিসেবে সর্বাত্বক কাজ করে যাবেন। কিন্তু সেটা কিভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখুন ব্রাজিল মধ্যম আয়ের দেশ। কিন্তু এখানে কাজের সুযোগ আছে, তবে সেটার জন্য আমাদের সরকারের ভাবনাটাও জরুরি। আমরা ইতোমধ্যে কিছু কাজ করছি যেটা সদ্য আগত প্রবাসী ভাইদের জন্য পজেটিভ হবে। যেমন ধরুন- এখানে এসেই অনেকে অর্থকষ্ট, কাজের সমস্যা, থাকার সমস্যায় পড়ে আমরা চেষ্টা করছি এই সংগঠনের মাধ্যমে সেটা দূর করার জন্য। এখানকার বাজার বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ভালো ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমরা মনে করছি।

সংগঠনের মাধ্যমে ঠিক কি করতে চাইছেন এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন- প্রথমত প্রবাসীদের মধ্যে ভাতৃত্ববোধের সৃষ্টি করা হবে। তাদের সমউদ্যোগকে কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে অর্থনৈতিক মুক্তির ধাপগুলো খুঁজতে হবে। আমরা চেষ্টা করবো এখানে অর্থনৈতিক জোন তৈরির। সেগুলো দ্রুতই বাস্তবায়নের জন্য এই সংগঠনের মাধ্যমে কাজ চলছে।

প্রবাসে বৃহত্তর নোয়াখালীর এই সংগঠনের অন্যতম কাজ হবে- দেশ থেকে আগত বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, যতটুকু সম্ভব কাগজপত্র তৈরিতে সহায়তা করা, অর্থনৈতিক সাপোর্ট করা।তবে সেজন্য এখানকার দূতাবাসকে আরো ঘনিষ্ট হয়ে কাজ করলে আমাদের উদ্যোগ আলোর মুখ দেখবে।

সরকারের উচিৎ প্রবাসীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে কাজ করা: নাসির
কাজের ব্যস্ততার মুহুর্ত্বে কমিটির সভাপতি মিলু

নেতৃত্বের গুণাবলী প্রসঙ্গে এই ক্রিড়া ব্যক্তি বলেন, দেশে থাকতে বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। প্রবাসে যখন গেলাম তখন গুণটা শানিত করেছি ক্রিকেটে নিজেকে জড়িয়ে। সেখানে একটি প্রদেশের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দশ হাজার রান সে সঙ্গে ১১০টি উইকেট নিয়ে নিজেরে দেশকে চিনিয়েছি। বলতে পারেন এটা আমাকে শানিত করেছে। আর নেতৃত্ব ব্যাপারটি আসলে সহজাত। তবে এখানেই থামতে চান না প্রবাসী এই নেতা। তার ভাবনায় ব্রাজিল অর্থনীতির উঠতি শক্তি হতে যাচ্ছে। দূতাবাসের উচিৎ হবে দেশটিকে আরো প্রত্যক্ষ সমীক্ষা করে প্রবাসীদের নিয়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে কাজ করা। ট্রেইন্ডহ্যান্ডের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের আরো বেশি করে সুযোগ করে দিতে হবে সেখানে ঢোকার। সরকার টু সরকার কাজ করলে যতটুকু এগুতো পারবো আমরা ব্যক্তি বা সংগঠনের উদ্যোগে কিন্তু অতটা সহজ নয়। এছাড়া এখানকার কৃষি প্রযুক্তি ও সম্পদের সুষম বন্টনের পদ্ধতিটাও আমরা ফলো করতে পারি। আসলে সব মিলিয়ে প্রবাসী আর সরকারের বোঝাপড়াটা যদি বাড়ানো যায় তাহলে তাহলে স্বাভাবিকভাবে দেশ উপকৃত হবে। প্রবাসে আমাদের সংগঠন এ কাজটাই করবে।

বর্তমানে এই নেতা ব্রাজিলে কাপড়, ট্রলি ছাড়াও সিজনওয়ারী ব্যবসায় নিজেকে জড়িয়েছেন। ব্যক্তিগত দুই সন্তানের জনক নাসির আহমেদ ফুলগাজী থানার বন্দুয়া গ্রামের জনহিতৈষী ফজলুল করীম মজুমদার ও মনোয়ারা বেগমের সাত সন্তানের মধ্যে চতুর্থ।

বিডিসংবাদ/আতে