সম্পূর্ণ সুচিত্রা

মুনমুন সেনের বিয়েতে সঞ্জীবকুমারের সঙ্গে খুনসুটি করছেন সুচিত্রা সেন, এমন এক বিরল ছবির পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে ‘আঁধি’ করার স্মৃতি লিখেছেন গুলজার, ‘শুটিংয়ে উনি একদম ইউনিটের একজন। অসম্ভব পাংচুয়াল, অসম্ভব ডেডিকেটেড। যত ভোরে হোক না কেন, ঠিক সময়ে মেকআপ করে সেটে এসে হাজির। সঞ্জীব বেচারা একটু ঘুমকাতুরে। সকাল-সকাল কল থাকলে ঠিক সময়ে এসে হাজির হতে পারত না।… সকালে উঠে সুচিত্রা সেন নিজের ঘরে মেকআপ করছেন। তারই ফাঁকে ফোন করে সঞ্জীবকুমারের ঘরে তাগাদা দিচ্ছেন ঘুম থেকে ওঠার জন্য।

সম্পূর্ণ সুচিত্রামেকআপ করতে-করতে স্পটবয়দের ডেকে বলছেন, ‘‘মোটুকে লিয়ে চায় লে যাও।’’ সঞ্জীবকুমারকে ‘মোটু’ বলতেন উনি। অত ব্যক্তিত্বময়ী একজন মহিলার পক্ষে যে এত সহজে এত অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ঠ হয়ে যাওয়া সম্ভব, ওঁকে না দেখলে বোঝাই যায় না।’ এমনই বহু রকমের ছবি আর লেখায় ‘আনন্দলোক’-এর পাতায় বিভিন্ন সময়ে উঠে এসেছে ‘মহানায়িকা’র জীবনের নানা অজানা কথা, রহস্যাবৃত ‘সুচিত্রা’র আড়াল সরিয়ে বেরিয়ে এসেছেন রক্তমাংসের ‘রমা’।

সর্বশেষ তাজা সব খবরের আপডেট পেতে বিডিসংবাদ ফেসবুক ফ্যান_পেজ এ  লাইক দিয়ে এক্টিভ থাকুনক্লিক করুন  

তাঁর ব্যক্তিজীবন, কর্মজীবন, এমনকী অভিনয়-জীবন থেকে স্বেচ্ছা-অবসর নেওয়ার পর কী ভাবে আধ্যাত্মিক-জীবনের সঙ্গে যুক্ত করে নিয়েছিলেন নিজেকে, তাও। এই আনন্দলোক সংকলনটি, সম্পূর্ণ সুচিত্রা (আনন্দ) বেরল বইমেলায়।

সম্পূর্ণ সুচিত্রাবইটির শুরুতেই তাঁকে নিয়ে স্বপ্নপ্রয়াণ-এ লিখেছেন পৌলমী সেনগুপ্ত: ‘সুচিত্রা সেনের কিংবদন্তি হয়ে ওঠা শুধু বাঙালির ভাবমোক্ষণের দ্বারা প্রভাবিত নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু তাঁর মধ্যে অবশ্যই বিদ্যমান।… অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায় তাঁর উত্তম-অবতারে বাঙালির প্রেমের শ্রেষ্ঠ ভাবসম্প্রসারণ ঘটিয়েছেন বটে, কিন্তু তিনি রমা সেনের সুচিত্রা-অবতারে রহস্যলাঞ্ছিত গরিমার কাছে পৌঁছতে পারেননি। সুচিত্রা অধরা, উত্তমকে যেন চেষ্টা করলে ধরা যায়।’ যে ফিল্মোগ্রাফি সংযোজিত হয়েছে, তাতে সুচিত্রার বর্ণময় অভিনয় জীবনের যাবতীয় ছবির তালিকার সঙ্গে সেগুলি বক্স অফিসে কীরকম ফলাফল করেছিল তারও হিসেব দেওয়া হয়েছে। শুধু সিনেমার নয়, সমাজের নানান চৌহদ্দির বিশিষ্ট জনেরাও লিখেছেন তাঁকে নিয়ে। আর অজস্র দুর্লভ সাদাকালো স্থিরচিত্র, শুধু সে জন্যেই এ বই অবশ্য সংগ্রহযোগ্য। সঙ্গে মাঝে প্রচ্ছদ, বাঁ দিকে সুচিত্রা সেনের ছবি, বই থেকে।