নরসিংদীতে বিএনপি নেতা ইউপি সদস্য খুন

নরসিংদী  প্রতিনিধিঃ

নরসিংদীতে রায়পুরায় কতিপয় সন্ত্রাসীরা একই উপজেলার অলীপুরা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করার এক চাঞ্চল্যকর সংবাদ পাওয়া গেছে। ২২ জানুয়ারী রোববার রাতে ঘাতকরা পরিকল্পিতভাবে অলীপুরা ইউনিয়নের তুলাতলী গ্রামে মজিবুর রহমান মেম্বারকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে বাড়ীর অদূরে ফেলে রেখে বীরদর্পে চলে যায়। তুলাতলী বাজার থেকে মজিবুর রহমান তার স্ব-স্ত্রীক নিয়ে রিক্সাযোগে বাড়ী ফেরার পথে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাদের গতিরোধ করে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় তার স্ত্রী ঘাতকদের হাত থেকে স্বামী মজিবুর রহমানকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা নিহত মজিবুর’র স্ত্রীর উপর হামলা চালালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে প্রাণ রক্ষায় দৌড়ে পালিয়ে যায়।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রায়পুরা উপজেলার তুলাতলী গ্রামের মরহুম সুলতান মিয়ার পুত্র মজিবুর রহমানের সাথে তার আপন চাচাতো ভাই স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আক্তার মিয়ার নির্বাচন সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। পর পর দুইবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে আক্তার মিয়া, মজিবুরের সাথে পরাজিত হয়। নির্বাচনী পরাজয়ের গ্লানি সহ্য করতে না পেরে আক্তার মিয়া মজিবুরের উপর খুবই ক্ষিপ্ত ছিল। সম্প্রতি হত্যাকান্ডের পূর্বে বিগত সময়ে ২ বার তাকে হত্যা করার জন্য আক্রমন চালিয়ে ব্যর্থ হয়। এ ব্যাপারে নিহত মজিবুর মেম্বারকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ পূর্ব্বক রায়পুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। অপরদিকে মজিবুর মেম্বার ছিলেন বিএনপি নেতা  মনিরুজ্জামান মনির হত্যাকান্ডের রাজস্বাক্ষী। এ মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

ঘটনার রাতে মজিবুর রহমান তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নিজ বাড়ী থেকে তুলাতলী বাজারে যান। সেখান থেকে গরুর জন্য ভুষি ক্রয় করে বাড়ী ফেরার পথে বাড়ীর নিকটে পৌছলে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা সন্ত্রাসী ঘাতকরা তার উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। ঘাতকরা মজিবুর রহমানকে নির্দিষ্ট রাস্তা থেকে ভিন্ন অবস্থানে নিয়ে যেয়ে সেখানে সন্ত্রাসীরা তার  মাথা, হাত ও বুকে এলোপাতারি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে বীরদর্পে চলে যায়। পরবর্তীতে নিহতের স্ত্রীসহ এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এরপর রায়পুরা থানা পুলিশে মর্মান্তিক হত্যার সংবাদ অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের  জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।

২৩ জানুয়ারী সোমবার দুপুরে নিহত মজিবুর মেম্বারের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ তার পরিবার পরিজনের নিকট হস্তান্তর করে। একই দিন বাদ আছর নিহত বিএনপি নেতা মজিবুর মেম্বারের নামাজে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজায় অংশ নেয় জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান উদ্দিন মোল্লা, রায়পুরা থানা বিএনপির আহবায়ক আব্দুর রহমান খোকনসহ বহুসংখ্যক স্থানীয় নেতাকর্মী ও সমর্থক। এছাড়া সকাল থেকে হাজার হাজার আবাল, বৃদ্ধ বনিতা নিহত মজিবুর মেম্বারকে শেষ বারের মত দেখার জন্য তার বাড়ীতে ভীড় জমায়। নিহতের জানাজায় জনতার ঢল নামে।
রায়পুরা থানার ওসি তদন্ত মোঃ মাজহারুল ইসলাম বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে হত্যার ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে।