বিদায় নিতে পারে ভারতও, সেমিতে যেতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান!

বিডিসংবাদ অনলাইন ডেস্কঃ

টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার ১২-এর আর মাত্র ছয়টি ম্যাচ বাকি। কিন্তু এখনো ঠিক হলো না শেষ চারে কোন দল যাবে। এমনকি অঙ্কের বিচারে এখনো কোনো দল হলফ করে বলতে পারবে না যে তারা সেমিফাইনালে খেলবেই। ফলে বলাই বাহুল্য তুমুল উত্তেজনা অজিভূমে টি২০ বিশ্বকাপ। সমীকরণে নয়া একটি আঙ্গিক যোগ করেছে অসময়ের বৃষ্টি। তাই পুরোদস্তুর ক্যালকুলেটর নিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে এটা বুঝতে যে ঠিক কোন কোন দল উঠতে পারে নক আউট পর্যায়। তারা কোন পজিশনে শেষ করবে সেটা নিয়েও তুঙ্গে চলছে জল্পনা। গ্রুপ স্টেজের এই নাটককে আরো জমিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। নিজেরা প্রায় ছিটকেই গেছে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে গ্রুপ টু-র হিসেব জমিয়ে দিলো বাবর বাহিনী।

এই মুহূর্তে ভারতের ছয় পয়েন্ট। প্রোটিয়াদের পাঁচ পয়েন্ট। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের চার পয়েন্ট আছে। ভারতের পরের ম্যাচ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে। যদি ভারত যেতে প্রত্যাশামতো, তাহলে ভারত এক নম্বরে শেষ করবে। তাই নিজেদের ভবিষ্যত এখন ভারতের হাতেই আছে।

অন্যদিকে প্রোটিয়াদের খেলা নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ খেলবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ভারত যদি কোনোভাবে হেরে যায় তাহলে তারা ছয় পয়েন্টেই থেকে যাবে। সেখানে দ্বিতীয় হওয়ার জন্য পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচের জয়ীর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এরমধ্যে পাকিস্তানের নেট রান রেট ইতিমধ্যেই ভারতের থেকে বেশি। ফলে পরের ম্যাচ যদি তারা জেতে ও ভারতের সাথে ছয় পয়েন্টে সমান হয়ে, তাদের নেট রান রেট ভারতের থেকে বেশিই হবে। ফলে পাকিস্তান শেষ চারে উঠে যাবে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের নেট রান রেট -১.২৭৬। ভারতের যেখানে ০.৭৩। যদি ভারত জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেও যায় এবং বাংলাদেশ পাকিস্তানকে হারায়, তাও খুব সম্ভবত বাংলাদেশ শেষ চারে উঠতে পারবে না তাদের খারাপ নেট রান রেটের জেরে। কোনো কারণে ভারতের ম্যাচ বাতিল হলে তারা সাত পয়েন্টে চলে যাবে। সেখানে প্রোটিয়ারাও সাত পয়েন্টে থাকবে যদি তারা নেদারল্যান্ডকে হারায়। প্রোটিয়াদের নেট রান রেট ভারতের থেকে ভালো তাই তারাই গ্রুপ শীর্ষে থেকে সেমিতে যাবে। ভারত হবে দ্বিতীয়।

অন্যদিকে যদি ভারত হারে ও প্রোটিয়াদের ম্যাচ বাতিল হয়, তাহলে তিনটি দল থাকবে ছয় পয়েন্টে। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ বা পাকিস্তান। সেখানে ফের হবে নেট রান রেটের লড়াই। তবে ভারতের নেট রান রেট এই মুহূর্তে তেমন ভালো নয়, ফলে ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ভারতের বিষয়টি একটু উদ্ভট। একনয় তারা গ্রুপে প্রথম হবে বা তৃতীয়। দ্বিতীয় হওয়ার সম্ভাবনা বৃহস্পতিবারের পর কিছুটা কমে গেল।

তবে অন্য গ্রুপ থেকে কারা যাবে সেটাও আদৌ নিশ্চিত নয়। খেলা বাকি আয়ারল্যান্ড-নিউ জিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তানের। এই মুহূর্তে কিউয়িরা, অজিরা ও ইংল্যান্ড পাঁচে আছে। শ্রীলঙ্কা চার ও আয়ারল্যান্ড তিন পয়েন্টে। তবে নেট রান রেটে অনেকটা এগিয়ে নিউ জিল্যান্ড, দ্বিতীয়তে ইংল্যান্ড, তিনে অজিরা। সব ঠিকঠাক চললে উঠবে নিউ জিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। কিন্তু যদি কিউয়িরা হেরে যায় ও বাকি দুই দল জেতে, তাহলে শীর্ষস্থানে থাকবে ইংল্যান্ড, দ্বিতীয়তে অজিরা। অজিরা হেরে গেলে তারা আউট। ইংল্যান্ড হারলেও থাকতে পারে যদি অজিরাও হেরে যায়। অজিরা জিতলে কিন্তু কিউয়িরা হারলে তখন নিউ জিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের মধ্যে হবে নেট রান রেটের লড়াই। শ্রীলঙ্কা ইংল্যান্ডকে হারালে পৌঁছবে যদি অজি ও কিউয়িদের মধ্যে কোনো একটা দল হারে। আয়ারল্যান্ড অন্যদিকে পাঁচে যেতে পারে ও আশা করতে পারে যে আফগানিস্তান হারিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়াকে ও ইংল্যান্ড শ্রীলঙ্কাকে হারায়। তাহলে তখন হবে নেট রান রেটের লড়াই।

অন্যদিকে নিউ জিল্যান্ড ম্যাচে বৃষ্টি হলে ও বাকি দুটি ম্যাচে না হলে, যদি অজিরা ও ইংল্যান্ড জেতে, তাহলে আউট হয়ে যাবে তারা। একইভাবে অজিদের ম্যাচ ভণ্ডুল হয়ে গেলে ও অন্য দুটি ম্যাচে প্রত্যাশিত ফলাফল হলে আউট হবে অজিরা। ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তিনটি ম্যাচই ভণ্ডুল হয়ে গেলে উঠে যাবে নিউ জিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। যেকোনো দুটি ম্যাচ ভণ্ডুল হয়ে গেলেও ফের নেট রান রেটের গল্প। সেখানে পিছিয়ে থাকবে অজিরা। আয়ারল্যান্ড জিতলে অন্যদিকে অজিদের ও ইংল্যান্ডের ম্যাচ বাতিল হয়ে গেলেও অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডই উঠে যাবে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা জিতলে ও কিউয়ি ও অজিদের ম্যাচ বাতিল হয়ে গেলে নেট রান রেটের গল্প থাকবে শ্রীলঙ্কার সাথে যাদেরও ছয় পয়েন্ট হবে। আফগানিস্তান জিতলে ও অন্য দুটি ম্যাচ ভণ্ডুল হয়ে গেলে কিউয়িরা ও ইংল্যান্ড উঠে যাবে।

তবে এখন পর্যন্ত সব রেজাল্ট প্রত্যাশামতো হলে ইংল্যান্ড বনাম ভারত সেমিফাইনালের সম্ভাবনাই বেশি। অপর সেমিতে থাকবে নি জিল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে এই বিশ্বকাপ বারবার সবাইকে অবাক করেছে। তাই গ্রুপ লিগের শেষ বল না হওয়ার আগে নিশ্চিতভাবে শেষ চার সম্ভবত বলা যাবে না।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

বিডিসংবাদ/এএইচএস